জুমাস ডেস্ক: বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা বাড়াতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে ঢাকায় আগামী ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বরে দুদিনব্যাপী কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিল (সিডব্লিউইআইসি) এ সম্মেলন আয়োজন করছে। এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাথে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা জেডআই ফাউন্ডেশন সহযোগিতা করবে।
ঢাকায় এই প্রথমবারের মতো কমনওয়েলথ বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে আয়োজকেরা জানিয়েছেন। কমনওয়েলথভুক্ত ৫৬টি দেশ থেকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ৪০০ থেকে ৫০০ প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারেন এবং এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক প্রতিনিধি বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
গত রোববার ঢাকায় একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশে সিডব্লিউইআইসির কৌশলগত উপদেষ্টা জিল্লুর হোসেন। এ সময় আর বক্তব্য প্রদান করেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য ও সিডব্লিউইআইসির ডেপুটি চেয়ারম্যান লর্ড সোয়ার ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া।
সালমান এফ রহমান তার বক্তৃতায় উল্লেখ বলেন, বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশ ভাবাবিষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি আর বলেন, সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত সম্মেলনটি বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অনেক বড় সুযোগ হতে পারে। এ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কমনওয়েলথভুক্ত অনেক দেশের ব্যবসায়ীদের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা নিজেদের বিনিয়োগ সম্ভাবনা উপস্থাপিত করার বড় সুযোগ হতে পারে। ফলসরূপ, এই সম্মেলনটি সবার জন্যই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং লাভজনক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডসের সদস্য ও সিডব্লিউইআইসির ডেপুটি চেয়ারম্যান লর্ড সোয়ার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের একটি ভালো লাভজনক দেশ হিসেবে গন্তব্যস্থল মনে করে যুক্তরাজ্যসহ কমনওয়েলথভুক্ত অনেক দেশ। এই সম্মেলনে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের সরকারি পর্যায়ের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা, তাঁরা পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা এবং বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবেন। এই সম্মেলনে আমরা আশা করতেছি যে, আফ্রিকা থেকেও বড় অংশগ্রহণ থাকবে, ইউরোপ ও এশিয়া অঞ্চলের সাথে।
লর্ড সোয়ার তার বক্তৃতায় আরও বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য কমনওয়েলথ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম।কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে বর্তমান বিশ্বে প্রতি চার ডলারের মধ্যে এক ডলার এফডিআই- সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ। বিশ্বের সমৃদ্ধিশালী শহরগুলোর প্রায় অর্ধেক হচ্ছে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর। এই সব কারণে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্যও এই সম্মেলনটি বেশ কার্যকরী হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বক্তৃতায় বলেন, বাংলাদেশ ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৫তম শীর্ষ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বিনিয়োগ করার পরিবেশ বৃদ্ধিতে অনেক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যারফলে বন্দর, জ্বালানিসহ বিভিন্ন পরিষেবা মানোন্নয়ন করা হচ্ছে। এখনই সুন্দর সময় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের উন্নয়নের সাথে অংশীদার হওয়ার।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া তার বক্তৃতায় বলেন, এই সম্মেলনটি বাংলাদেশের জন্যও কার্যকর হবে কারণ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্ভাবনা খুঁজছে। বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পাশাপাশি তথ্য ও অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের মধ্যমে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো বেশ উপকৃত হবে বলে আশা করি।
ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, মাল্টাসহ কমনওয়েলথভুক্ত কয়েকটি দেশে কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য যে, ৫৬টি দেশের সংগঠন কমনওয়েলথে ৩৪তম সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে যোগদান করে।
– মোহাম্মদ মামুন রশিদ