সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্সে বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ জয়, ঢাকার টানা নবম হার

দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে তামিম ইকবাল ও সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্সে বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ জয়, ঢাকার টানা নবম হার

জুমাস ডেস্ক: চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবালের ৪৫ বলে ৭১ রানের সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়েছে।

পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা দুর্দান্ত ঢাকাকে হারিয়েছে ২৭ রানে। ১৮৭ রানের লক্ষ্যে অ্যালেক্স রসের ৪৯ বলে ৮৯ রানের ইনিংসের পর দুর্দান্ত ঢাকার ইনিংস ১৫৯ রানেই শেষ হয়।

তামিমের ইকবালের দল ফরচুন বরিশাল এই জয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে টপকে তিনে উঠে এসেছে। ৯ ম্যাচে দুই দলেরই সমান ১০ পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটে এখন চট্টগ্রামের (-০.৮৮৪) চেয়ে এগিয়ে বরিশাল (০.৪৭৫)। প্রথম ৪ ম্যাচে ৩টি হারের পর সর্বশেষ ৪ ম্যাচে ৩টি জিতল তারা। অন্যদিকে বিপিএলের নতুন দল দুর্দান্ত ঢাকার ভাগ্য বদলাচ্ছেই না। টানা হারের রেকর্ড আগেই গড়েছে, এবার সে ধারাই লম্বা হলো আরেকটু। টানা ৯টি ম্যাচ হারা অঃঢাকা এবার চূড়ান্তভাবেই শিরোপা লড়াই থেকে বাদ পড়ল। মৌসুমের প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে হারিয়ে চমক দিয়ে শুরু করা দুর্দান্ত ঢাকা জয়ের অনুভূতিই ভুলতে বসেছে। ম্যাচের পর তাসকিন একটু হাসার চেষ্টা করে শুধু বলেছেন, ‘পরাজয় সব সময়ই কঠিন।’

গতকাল বুধবার ( ১৪ ফেব্রুয়ারি) টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া ফরচুন বরিশালের ইনিংসের বড় সংগ্রহে মূল অবদান অধিনায়ক তামিম ইকবালের। যদিও তাঁর সঙ্গে ঠিক তাল মেলাতে পারেননি অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা। তামিমের স্ট্রাইক রেট ১৫৭.৭৭, প্রথম সাত ব্যাটসম্যানের আর কারও স্ট্রাইক রেটই ১৩০-এর বেশি নয়। পাওয়ারপ্লেতে ফরচুন বরিশালের ৫৪ রানে ছিল ৭টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা। নবম ওভারে আলাউদ্দিন বাবুর শিকারে পরিণত হন তামিমের ওপেনিং সঙ্গী আহমেদ শেহজাদ, উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৭৬ রান। দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্যকে নিয়ে তামিম যোগ করেন আরও ৪৮।

তামিম ইকবালের এবারের বিপিএলে  প্রথম অর্ধশতকটি এসেছে ৩৪ বলে। শতকের পথেই এগোচ্ছিলেন, কিন্তু আলাউদ্দিনকে চার মারার পর আবার তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন। ছক্কা মেরেছেন ৪টি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে ১০০ ছক্কার মাইলফলকও ছুঁয়েছেন এদিনই। মিডল অর্ডারে অবশ্য কেউ ইনিংস টানতে পারেননি ফরচুন বরিশালের সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ শুরু করেও গতি বাড়াতে ব্যর্থ হন, মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরেন শুরুতেই।

সাইফউদ্দিন শেষ ওভারে শরীফুল ইসলামের ওপর চড়াও হন, শেষ ৫ বলে তোলেন ২২ রান। তাঁর ৬ বলে ২৩ রানের অপরাজিত ক্যামিও ইনিংসেই ফরচুন বরিশাল পেরোয় ১৮০। এ মৌসুমে ফরচুন বরিশালের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর।

পক্ষান্তরে দুর্দান্ত ঢাকা কখনোই এই রান তাড়া করার সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি। ২ ওভার শেষ না হতেই টপ অর্ডারের তিনজন মোহাম্মদ নাঈম, অ্যাডাম রসিংটন ও সাইফ হাসানকে হারায় তারা। এক প্রান্তে রস টিকে ছিলেন, তবে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা কেউই সঙ্গ দিতে পারেননি তাঁকে। অষ্টম ও নবম উইকেট জুটিতে তাসকিন ও আরাফাত সানিকে নিয়ে রস তোলেন ৪৩ বলে ৭৯ রান, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

সাইফউদ্দিন ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও দারুণ ছিলেন, রসিংটন-সাইফের পর নিয়েছেন তাসকিনের উইকেটও। ২৬ রানে ৩ উইকেট নেন আরেক পেসার খালেদ আহমেদও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

 ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮৬/৬ (শেহজাদ ২৪, তামিম ৭১, সৌম্য ২৮, মাহমুদউল্লাহ ১৩, মালিক ১০*, মুশফিকুর ১, মিরাজ ০, সাইফউদ্দিন ২৩*;

বোলিং: মোসাদ্দেক ৪-০-২৬-০, শরীফুল ৪-০-৪০-১, তাসকিন ৪-০-৩০-২, সানি ১-০-২১-০, উইলিয়ামস ২-০-২১-০, আলাউদ্দিন ৪-০-৩০-০, মেহেরব ১-০-১৫-০)।

 দুর্দান্ত ঢাকা : (নাঈম ১০, রসিংটন ৪, সাইফ ২, রস ৮৯*, উইলিয়ামস ১২, মেহেরব ৬, মোসাদ্দেক ৮, আলাউদ্দিন ৩, তাসকিন ১০, সানি ৮*;

বোলিং: মহারাজ ৪-০-১৯-১, সাইফউদ্দিন ৪-০-৩১-৩, ম্যাকয় ৪-০-১৭-১, খালেদ ৪-০-২৬-৩, সৌম্য ৩-০-৫৪-০, মিরাজ ১-০-৯-০)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ২৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল (ফরচুন বরিশাল)।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *